দুদক চেয়ারম্যানের নামে ঘুষ বাণিজ্য; সেই দয়াজ অধরা।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ-
দুদক চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন মানুষজনের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল দয়াজের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তাঁর এই রমরমা ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে আসে।
প্রচারিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকটা প্রকাশ্যে রাজধানী ঢাকায় বসে দুদক চেয়ারম্যানের নাম করে ঘুষ গ্রহণ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে দয়াজ। বিষয়টি নিয়ে দুদকে চাপা আলোচনা থাকলেও এটি এখন ওপেন সিক্রেট। প্রতিবেদনে আব্দুল দয়াজের একটি অডিও কথোপকথন প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে ৪০ লাখ টাকার বিনিময়ে দুদকের অভিযোগ থেকে একজনকে রেহাই পাইয়ে দেওয়ার অঙ্গিকার করছে দয়াজ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আব্দুল দয়াজ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাসিন্দা। তিনি যুক্তরাজ্য প্রবাসী। ব্যবহার করছেন বাংলাদেশি পাসপোর্টও। বছরের বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসেন। বাংলাদেশে এসে ওঠেন রাজধানী ঢাকায় হোটেল ভিক্টোরিয়াতে। যুক্তরাজ্যে তাঁর রেস্টুরেন্ট ব্যবসা রয়েছে বলে শোনা যায়। বাংলাদেশে তিনি পরিচিত দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিশ্বস্ত বন্ধু। সুনামগঞ্জের ছাতকে তাঁর বাড়িতে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা গেছেন। তাঁর বাড়িতে দুদক কর্মকর্তারাও ঘুরে গেছেন বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসী। দয়াজের এই নেটওয়ার্কে আছেন আরো অনেকে যারা ঘুষ লেনদেনের দরাদরি করেন।
প্রতিবেদনে প্রচারিত আরেকটি অডিও কথোপকথনে দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসিরকে বলতে শোনা যাচ্ছে, দয়াজের সঙ্গে কথা বলুন, যদি সে এগ্রি করে, আমি দিতে পারি। অন্যদিকে আরেকটি অডিও কথনে দয়াজ বলছে, দিনাজপুরের কয়লাখনির কোনো কেস হয়েছে কিনা, এটার ইনকোয়ারি চলছে নাকি, এটার কোনো লেনদেন হয়েছে কিনা, লাইনঘাট হয়েছে কিনা।
এসব বিষয়ে ওই প্রতিবেদক দয়াজের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তখনকার দুদক চেয়ারম্যানের কাছে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বহু লোককেই তো চিনি। আপনি কি জানেন, আমরা কয়েকবার প্রেস রিলিজ দিয়েছি। আত্মীয়-স্বজনের নামে৷ বন্ধু-বান্ধবের নামে কেউ যদি কিছু করে আমাদের জানাবেন। দয়াজ দুদকের নাম ভাঙ্গিয়ে কি কাজ করেন তা আমাদের কেউ জানায়নি। আপনি যদি জানেন দুদকের নাম সে কোথায় বিক্রি করছে তা জানান।
এদিকে দয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পাঁচবারের বিশ্ব কিকবক্সিং বক্সার আলী জ্যাকোর ছাতকে থাকা একটি দোকানকোঠা দখল করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হোন তিনি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৫ সালে বক্সার আলী জ্যাকোর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করে। দয়াজের এমন ঘটনায় ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। এবং এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও তাঁর কুশপুত্তলিকা পুড়ানো হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে আব্দুল দয়াজকে সন্ত্রাসী ও মামলাবাজ আখ্যায়িত করে ছাতকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এলাকাবাসী।
আপনার মতামত লিখুন :